স্বৈরাচারী সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে নতুন সরকার নির্বাচনের আগে কিছু সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৩ নভেম্বর) তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও মাইক্রোফাইন্যান্সের অগ্রদূত ড. ইউনূস কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবস্থান করছেন। সেখানেই এএফপিকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সংস্কারের গতি নির্ধারণ করবে নির্বাচনের সময়সীমা। তিনি আরও বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ভোট প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন।
ড. ইউনূস বলেন, “এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। যত দ্রুত আমরা প্রস্তুতি নিতে পারব, তত দ্রুত নির্বাচন হবে। তখন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবেন।”
তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান সংশোধন, সরকার, সংসদ ও নির্বাচনী নিয়মাবলীর সংস্কারে দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছানো জরুরি। “আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের সময়কাল যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত,” তিনি বলেন।
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর ড. ইউনূস দেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন, যা গত জুলাইয়ে শুরু হয়, ধীরে ধীরে এক দফা আন্দোলনে রূপ নেয় এবং জনতা ছাত্রদের সঙ্গে রাজপথে নামলে তা গণআন্দোলনের আকার ধারণ করে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার চাপের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে তার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
এই আন্দোলনে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নে ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হন।
হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “যেকোনো সরকারই স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। আমরাও সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আশা করছি, আমরা পরিস্থিতি সমাধান করতে সক্ষম হব এবং শান্তিপূর্ণভাবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারব।”