অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ঋণ মানুষের জীবিকার সাথে সংশ্লিষ্ট বলে এটি একটি মানবাধিকার। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯)-এর এক সাইডলাইন গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ঋণের অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া জীবিকার অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কৃষকদের ঋণ সুবিধা দিলে তারা উদ্যোক্তা হতে পারেন, কারণ প্রতিটি ব্যবসার জন্য অর্থ ও বিনিয়োগ প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের অগ্রদূত হিসাবে পরিচিত অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, কৃষক শুধু ফসল উৎপাদন করেন না, বাজারে তা বিক্রিও করেন। তাকে ঋণ দিলে তিনি অন্য কৃষকের কাছ থেকে ফসল কিনে নিজের জীবনযাত্রা উন্নত করতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর উচিত গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল অনুসরণ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা, যাতে কৃষকদের ঋণ সহজলভ্য হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশে সামাজিক ব্যবসার জন্য একটি ব্যাংকিং আইন থাকা উচিত। বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১১০টি বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ব্যবসাকে কোর্স হিসেবে পড়াচ্ছে।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ। নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু দূত ডাচ যুবরাজ জেইমি বার্নার্ডো বোরবন-পারমাও এতে উপস্থিত ছিলেন।
ডাচ যুবরাজ ঋণ, বীমা, বিনিয়োগ, গবেষণা ও অর্থ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে কীভাবে সহায়তা করছে তা উল্লেখ করে বলেন, লাখ লাখ কৃষক এ সহায়তা প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইভন পিন্টো বলেন, ঋণের সহায়তায় বিশ্বব্যাপী ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডাচ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ব্যাংক এফএমও’র অন্যতম পরিচালক জোরিম শ্রাভেন ঋণের অধিকারের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাগত জানান এবং বলেন, এটি জনগণের জানার অধিকার।
ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস)-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা হক রহমান এবং আইপিএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নোরাম উল্লেখ করেন, বর্তমানে ৫৫০ মিলিয়ন ক্ষুদ্র কৃষক পরিবার সারা বিশ্বের দুই বিলিয়ন মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে।
সূত্র: বাসস