আলভী মাহমুদ আলিফ প্রতিনিধি :
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মৃত আকরাম হোসেন (৫২) পিতা- মৃতঃ আজদার আলী শাহ, সাং-তালাইমারি শহিদ মিনার, থানা-বোয়ালিয়া রাজশাহী মহানগর পেশায় একজন বাস ড্রাইভার। আসামী নান্টু (২৮) তাহার প্রতিবেশি। ভিকটিমের পরিবারের সাথে নান্টুর পূর্ব থেকেই শত্রুতা ছিল। ভিকটিমের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী। ঘটনার দিন সময়-বিকাল ৪.৩০ মিনিটের সময় ভিকটিমের মেয়ে প্রাইভেট পড়া শেষ করে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকায় অটোরিকশা থেকে নেমে বাসায় যাওয়ার পথে আসামী নান্টু ও তার সহযোগীরা তাকে গালিগালাজ করে উত্তক্ত করে। ভিকটিমের মেয়ে তাদেরকে কিছু না বলে তার বাসায় গিয়ে বাবা আকরাম হোসেনকে গালিগালাজের কথা বলে।
তার বাবা নান্টুর বাবাকে নান্টুর উত্তক্ত করার বিষয়ে জানায়। এতে নান্টু আরও ক্ষীপ্ত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৬/০৪/২০২৫ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১০:০৫ মিনিটের সময় রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন তালাইমারি শহিদ মিনার সাকিনস্থ জনৈক মনি (৬৫) এর বসত বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর দিয়ে মামলার বাদী মোঃ ইমাম হোসেন অনন্ত (২৪), পিতা- মৃত আকরাম হোসেন, সাং-তালাইমারি শহিদ মিনার, থানা-বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগর নিজের বাড়ি দিকে যাওয়ার সময় আসামী নান্টু ও তার সহযোগী ৯-১০ জন মিলে লোহার রড, বাশের লাঠি, কাঠের লাকরি, ইটের আধলা নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য আক্রমন করে এলোপাথারী মারধর করতে শুরু করে। ইমাম হোসেন প্রাণ বাচাঁনোর তাগিদে চিৎকার করলে তার বাবা ভিকটিম আকরাম হোসেন (৫২) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আসামীরা তাকেও মারধর করা শুরু করে। ঘটনার একপর্যায়ে ভিকটিমের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে ভিকটিম গুরুতরকরে রক্তাত্ত জখম প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে আশে পাশে থাকা লোকজন এগিয়ে না আকি সলেই আসামীরা উক্ত স্থান হতে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় ভিকটিম’কে অটোরিক্শা যোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রাত ১০:৪৫ মিনিটের সময় ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করে।
ঘটনাটি দেশব্যাপী প্রিন্ট, ইলেক্টনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী আসামীদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারে ও বিচারের জন্য লাশ নিয়ে রাজশাহী মহানগরের তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে বাদী হয়ে আরএমপি এর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ৭ জনকে এজাহার নামীয় ও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১৫/৮৬, তারিখ ১৭/০৪/২০২৫, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। আসামীরা হলেন ১। মোঃ নান্টু (২৮), পিতা- মোঃ কালু মিয়া, ২। মোঃবিশাল (২৮), পিতা- মৃতঃ রতন মিয়া, ৩। মোঃ খোকন মিয়া (২৮) পিতা-মৃতঃ আঃ সাত্তার, ৪। মোঃ তাসিন হোসেন (২৫), পিতা- মোঃ শাহিন, ৫। মোঃ অমি (২৫), পিতা-অজ্ঞাত, ৬। মোঃ নাহিদ, পিতা- জামাল, ৭। মোঃ শিশির (২০), পিতা- মোঃ পেরু সর্ব সাং- তালাইমারি শহিদ মিনার থানা- বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগর।
উল্লেখিত মামলার প্রেক্ষিতে আসামীদের কে গ্রেফতারের অভিযানে নামে র্যাব।
৩। এরই ধারাবাহিকতায় জনাব লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, পিএসসি, অধিনায়ক, র্যাব-৫, রাজশাহী মহোদয়ের নির্দেশনায় র্যাব-৫, সদর কোম্পানী রাজশাহীর একটি চৌকস অভিযানিক দল ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ইং তারিখ রাত ৮:০৫ মিনিটের সময় নওগাঁ সদর থানাধীন রামরায়পুর আড়ারাপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার ১ নং এজাহার নামীয় আসামী ১। মোঃ নান্টু (২৮), পিতা- মোঃ কালু মিয়া ও সহযোগী ৩ নং আসামী ২। মোঃ খোকন মিয়া (২৮), পিতা-মৃতঃ আঃ সাত্তার, উভয় সাং- তালাইমারি শহিদ মিনার, থানা-বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগরদ্বয়’কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় উক্ত ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।