ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী ও খাদ্য নিরাপত্তার এই বাজেট উন্নয়নমুখী : উপাচার্য ড. মশিউর রহমান

সত্যের কন্ঠ
জুন ১৭, ২০২৩ ১০:১৩ অপরাহ্ণ
পঠিত: 287 বার
Link Copied!

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী ও খাদ্য নিরাপত্তার এবারের বাজেট উন্নয়নমুখী। এই বাজেটে পুঁজিবাদী নয়, সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণই মূল লক্ষ্য। এজন্য রাষ্ট্র, সমাজ এবং বাজার- এই তিন নিয়ামকের মাঝে সমন্বয় খুবই জরুরি।

শুক্রবার (১৬ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এডুকেশন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণ: বাজেট ২০২৩-২০২৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।

দেশের ভূ-অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘একটা সময় এই অঞ্চল ছিল অর্থনীতিসহ বিভিন্ন দিক থেকে সমৃদ্ধ। ক্রমান্বয়ে শোষণের যাঁতাকলে আত্মশক্তিকে বিলীন করেছি। আমাদের ঐতিহ্য ছিল, সংস্কৃতি ছিল, অর্থনৈতিক বুনিয়াদ ছিল। মূলত. শোষণের যাঁতাকলে এই অঞ্চলের মানুষ আত্ম-প্রবঞ্চনার মধ্যে পড়েছে।

বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রসৃষ্টির বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কেন তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল? দ্বিতীয় বিপ্লব ছিল তাঁর বড় শত্রু। দ্বিতীয় বিপ্লবে বঙ্গবন্ধু মূলত চেয়েছিলেন নতুন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো গড়তে। তিনি বলেছিলেন প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা আমি ভেঙে ফেলব। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এই কাঠামোর অর্থনীতির বুনিয়াদে সংকট আছে। সেই সংকট তিনি ভাঙতে চেয়েছিলেন।

উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আজকে কেন ড. ইউনূস তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য। কারণ গরিব মানুষকে লোন দিয়ে সেখান থেকে মুনাফা করে পুঁজির যে বাজার সৃষ্টি হয়; মানুষকে শোষণ করে, মানুষকে ঋণ দিয়ে সেই ঋণ থেকে মুনাফা করে যে ব্যাংক পরিচালিত হয় তাতে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সম্প্রসারণের বিষয়টিই থাকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার নীতিমাল হচ্ছে- প্রান্তিক, নিরণ্ন, অসহায় এমনকি হিজড়া, বেদে, বিধাব থেকে শুরু করে সবার কাছে সেফটি নেট প্রোগ্রাম নিয়ে যাওয়া। একদিকে ঋণের অর্থনীতি, শোষণের অর্থনীতি- অন্যদিকে এই যে ফুড সিকিউরিটি এন্ড স্যোশাল সেফটি- এই দুুটি প্রোগ্রামই একটি রাজনীতিবিদের জীবনে বড় বিষয়। একজন মানুষ তার অর্থনীতির পরিকল্পনায় খাদ্য নিরাপত্তা এবং বঞ্চিত মানুষকে টেনে তুলে বাজারে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। এটি পুঁিজবাদী দেশের পছন্দের জায়গা না। সেকারণে শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক নীতিমালা তাদের অপছন্দ। ড. ইউনূসের শোষণের এবং ঋণের অর্থনীতি তাদের পছন্দ।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল মার্কিনিরা। আজও তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির বিপক্ষে। ওই পুুঁজিবাদী ধারায় একচেটিয়া মনোপলি ক্যাপিটালিস্ট তৈরি হবে, সেটি আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে রাখিনি। আমরা একটি সুষম বাংলাদেশ নির্মাণের কথা ভাবছি। সেই সুষম বাংলাদেশ নির্মাণে রাষ্ট্র, সমাজ এবং বাজার নিয়ামক শক্তি। এই বাজারের নিয়ন্ত্রণ এই সময়ে একটি দুঃসাধ্য বিষয়। পুঁজিবাদী বাজার সম্প্রসারণে একচেটিয়া ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়। একচেটিয়া ধনিক শ্রেণি তৈরি হলে ওই লুঙ্গি পরা, গেঞ্জি পরা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের কোথায় পরিবর্তন নিশ্চিত হবে? শুধু ধনিক শ্রেণির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এই রাষ্ট্র নির্মিত হয়নি।

উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেদিন বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। তার প্রধান কারণ এই অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত সুষম বণ্টনের অর্থনীতির সমাজ কাঠামো, রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে উঠলে তা পুঁজিবাদী অর্থনীতির জন্য হতো বড় অন্তরায়। সেকারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল পাকিস্তান। এর বেনিফিসিয়ারি ছিল সামরিক শাসকরা। তারা একইভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ অর্থনীতি কাঠামো গড়তে চেয়েছিল। এরফলে তৈরি হয়েছে ধনিক শ্রেণি। অসম, বৈষম্যপূর্ণ সমাজ।

এরপর দীর্ঘদিন সামরিক শাসনের যাঁতাকলে ছিলাম আমরা। মুক্তিটি কোন পথে আসল? বঙ্গবন্ধু কন্যা যেদিন দেশে ফিরে আসলেন। সেদিন তিনি কেন স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বললেন না। ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললেন না। সেদিন তিনি বললেন ভোট এবং ভাতের অধিকারের কথা। আসলে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে প্রথমে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করতে হয়েছিল। তিনি প্রথমে ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেন। এরপর তিনি সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক বুনিয়াদ গড়েছেন। আজকে ২০২৩ সালে তিনি এসে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছেন।

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।