মাওলানা শামীম আহমেদঃ
ঋণ নিতে বেশ অনুনয়-বিনয় করে নিলেও ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে প্রচণ্ড রকম অনাগ্রহ দেখা যায়। ছলে-বলে-কৌশলে ঋণ থেকে পালিয়ে বেড়ানোর প্রাণান্ত চেষ্টা আমাদের অনেকের মধ্যে বেশ বিশ্রীভাবে লক্ষ করা যায়। সাধারণ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি অত্যন্ত মন্দ অভ্যাস। আচার-ব্যবহারে মার্জিত ও ভদ্র অনেক মানুষকেও দেখা যায়, এ ব্যাপারে তাঁরা সচেতনতার পরিচয় দেন না।ইসলাম এ ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং ঋণ আদায়ে গড়িমসিকারী সম্পর্কে কঠিন হুঁশিয়ারি দেয়।
আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শহীদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়; তবে ঋণ কখনো ক্ষমা করা হয় না।’ (মুসলিম) আরেকটি দীর্ঘ হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, কেউ যদি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়ে পুনরায় জীবনপ্রাপ্ত হয়, এভাবে কয়েকবার হয় কিন্তু তার ওপর ঋণের বোঝা থেকে যায়, তবে সেই ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ)
ইসলামে শাহাদাতের মর্যাদা প্রশ্নাতীত। কিন্তু এ মহান কাজে মৃত্যুবরণ করা সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করবেন না—যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা হবে। যেহেতু ঋণ বান্দার অধিকার, তাই সেটা অবশ্যই বান্দার কাছ থেকেই ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে অথবা পরিশোধ করে দিতে হবে। স্ত্রীর দেনমোহরও মূলত স্বামীর ওপর ঋণ। এ ঋণও অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অত্যন্ত খুশি মনে স্বামীকে ক্ষমা করে দেয় অথবা স্বামীকে উপহার দেয়, তবে তা ক্ষমাযোগ্য বিবেচিত হবে। জোর করে তার কাছ থেকে ক্ষমা নেওয়া হলে সেটা প্রকৃত বিচারে ক্ষমা বিবেচিত হবে না।