মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নদী দখলকারীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, এবং নতুন সংবিধানে নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগের কথা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, “উন্নয়ন একটি ফ্যাসিস্ট শব্দ; উন্নয়নের নামে আমাদের গণতন্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে এবং পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে। নদী যদি রঙ পরিবর্তন করতে পারতো, তাহলে তার পানি রক্তের মতো লাল হয়ে যেত।” তিনি আরও মন্তব্য করেন, নদী ধ্বংসকারীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।
আজ বিকেলে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) অডিটোরিয়ামে “ফ্যাসিবাদের কবলে নদী” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, “হাওরের রাস্তায় আলপনা আঁকা হয়, যার রং পানিতে মিশে গিয়ে মাছ মারা যায় এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়। এই বিষয়ে কথা বলার মানুষ এখন কমে গেছে। তাই নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে নতুন আইন করার কথা ভাবা হচ্ছে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম বলেন, আবরার ফাহাদ নদীর কথা বলতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদের কবলে গত ১৬ বছরে নদীর যে বিপর্যয় হয়েছে, তার সমাধান নিয়ে ভাবতে হবে। তিনি জানান, নদী, কৃষি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য একটি জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা হবে।
উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব নদীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমাদের স্লোগান ছিল “পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা।” ঢাকার চারপাশে থাকা চারটি নদীকে কেন্দ্র করে একটি জনবান্ধব নগর পরিকল্পনা করা সম্ভব হতো। বিভিন্ন মাফিয়া গোষ্ঠী নদী দখল ও পরিবেশ ধ্বংস করে স্বার্থ হাসিল করেছে। তাই আমরা দখলদারদের প্রতিহত করার জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করব, যা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে পিআইবি’র মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতিসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ।